তীক্ষ্ণ হুইসেল বাজিয়ে ট্রেন যাত্রা শুরু করল। প্রথমে ধীরে, তারপর গতি বাড়ছে। বাইরে জানালার পাশে চরিত্রগুলো দৌড়াচ্ছে, তারা তাকে বিদায় দিতে চায় না ।
তিনিও কি চান? না, চান না।
এদের সাথে প্রায় একটি বছর তিনি কাটিয়েছেন, তাদের সাথে কেঁদেছেন, হেসেছেন, চা খেয়েছেন কখনো বা জমিয়েছেন তাসের আড্ডা।
ওই যে সবার আগে দেখা যাচ্ছে অষ্টাদশী মেয়েটিকে, যার একটুতেই কেঁদে দেওয়ার অভ্যাস। আচ্ছা!
মেয়েটিকে তো তিনি সত্যটা বলেননি। বললে সে কী করত? ভাবতে ভাবতে তার মন খারাপ হয়ে গেলো।
‘প্লেবয় রনি’ ট্রেনের দিকে হাত বাড়িয়ে দৌড়াচ্ছে, যেন সে তাকে একটানে আবার স্টেশনে নামিয়ে আনবে, বাড়ি ফিরতে দেবে না।
রনির পাশেই প্রাণপণে ছুটছে শারফেনাজ ।
তার চোখে তীব্র আকুতি।
যে মায়ায় তিনি মেয়েটিকে এঁকেছেন তা ছাড়া সে বাঁচবে কীভাবে?
নাবিক বারটেল গ্রাম হুইল চেয়ারে স্তব্দ হয়ে বসে আছেন, ট্রেনের সাথে দৌড়ানোর ক্ষমতা তার নেই। ভদ্রলোকের চোখে নোনাজল দূর থেকেও বোঝা যাচ্ছে।
সবার পেছনে ছাতা হাতে ছুটছেন আজমতউল্লাহ স্যার- যেন স্কুল ফাঁকি দেওয়া ছাত্রের পেছনে ছুটছেন।
একসময় ট্রেন পূর্ণ গতি পেলো, চরিত্রগুলো পেরে না ওঠে ক্রমশ অস্পষ্ট হয়ে উঠতে লাগল, তারপর মিলিয়ে গেলো।
লেখক নিঃশব্দে কাঁদছেন- সমাপ্ত হয়েছে এসব সাধারণ কিন্তু অসাধারণ মানুষগুলোর সাথে তার দিন যাপন।
ভেঙে গেছে এক বছরের আনন্দ-বেদনার খেলাঘর।
Reviews
There are no reviews yet.